পুলক সরকারঃ গেল বছরের ডিসেম্বর মাসের ১৮ তারিখে কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার কয়া মহাবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অবস্থিত ভারতে ব্রিটিশ শাসনবিরোধী সশস্ত্র সংগ্রামের বাঙ্গালি বিপ্লবী নেতা বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। ভাঙচুরের দীর্ঘ ৯ মাস পেড়িয়ে গেলেও ভাস্কর্যটি সংস্কার করা হয়নি। ভাঙচুরের ক্ষত-বিক্ষত অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে বিপ্লবী বাঘা যতীনের ভাস্কর্যটি। এদিকে বাঘা যতীনের ক্ষত-বিক্ষত ভাস্কর্যটি কবে সংস্কার হতে পারে তা এখন পর্যন্ত অনিশ্চিত।
জানা যায়, ভাঙচুরে ঘটনায় সে সময় ৩ জনকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করে ৭ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ। গত বছরের ২১ ডিসেম্বর কুষ্টিয়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সেলিনা খাতুন শুনানি শেষে আসামিদের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের বিপ্লবী সংগঠন ‘যুগান্তর দলে’র প্রধান নেতা ছিলেন যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। তিনি ১৮৭৯ সালে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া গ্রামে জন্মেছিলেন বলে বাংলাদেশ সরকারি তথ্য বাতায়নের বলা হয়েছে। ভারতে ব্রিটিশবিরোধী সশস্ত্র আন্দোলনে তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ঠিক আগে কলকাতায় জার্মান যুবরাজের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষাৎ করে তিনি জার্মানি থেকে অস্ত্র ও রসদের প্রতিশ্রুতি অর্জন করেছিলেন। তিনি বাঘা যতীন নামেই সুপরিচিত। খালি হাতে বাঘ মারার কারণে তিনি ‘বাঘা যতীন’ নাম পান।
যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় ১৯১৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলিতে নিহত হন। সে সময় তার বয়স ছিল মাত্র ৩৬ বছর। তাঁর স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য কুমারখালী উপজেলার কয়া মহাবিদ্যালয়ের সামনে বিপ্লবী বাঘা যতীনের এই আবক্ষ স্থাপন করা হয়। ২০১৬ সালের ৬ ডিসেম্বর তৎকালীন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার আবদুস সামাদ ভাস্কর্যের উদ্বোধন করেছিলেন।