শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে তিন ধাপে।
সেপ্টেম্বর মাস থেকে ধাপে ধাপে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ পর্যায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার।
নভেম্বর-ডিসেম্বরে এসএসসি পরীক্ষা ছাড়া এ পরিকল্পনা থেকে বাদ রাখা হয়েছে স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের এ পরিকল্পনার বাইরে রাখার পেছনে যুক্তি হচ্ছে-প্রায় শেষ চলতি শিক্ষাবর্ষ। সেপ্টেম্বরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হলেও অর্ধবার্ষিক কিংবা বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে না। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খোলার বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ কিছু আগাম ও বলতে চাইছেন না।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, যতদূর সম্ভব শিক্ষার্থী, শিক্ষক-কর্মকর্তাদের করোনার টিকার আওতায় আনার জোর চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। হয়ত এই টিকাপ্রদানের ওপর ভিত্তি করেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পরিকল্পনা করছে সরকার।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সব পরিকল্পনা নির্ভর করছে আগামী এক মাসে কত সংখ্যক শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে তার ওপর।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর আগে নেওয়া হবে স্থগিত থাকা পরীক্ষাগুলো।এরই অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের দু’দিন পরপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচ্ছন্ন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সকলস্তরের শিক্ষকদের টিকাদান কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে নিতে টাইমলাইন দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মণি গণমাধ্যমকে জানান, সরকারি পর্যায়ের প্রায় সকল শিক্ষকই টিকা নিয়েছেন। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৩ লাখ ৬৩ হাজার ২২২ শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্যে টিকা নিয়েছেন ২ লাখ ৭৮ হাজার ৪২৬ জন। বাকি আছেন প্রায় ৮৪ হাজার জন। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৪ হাজারের বেশি শিক্ষক টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন, তাদের মধ্যে ৩০ হাজারের বেশি টিকা নিয়েছেন। আগামী ৪-৫ দিনের মধ্যেই সব শিক্ষকই টিকা নিয়ে নেবেন আশা করা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ লাখ ৭৯ হাজার ২৬১ শিক্ষার্থী টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন।এর মধ্যে ৭৯ হাজার ৯১৪ জন পেয়েছেন প্রথম ডোজ। দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ৬ হাজার ৭২ জন।
তিনি আরও বলেন, করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে নভেম্বরে এসএসসি, ডিসেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে আটকে থাকা স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের চূড়ান্ত পরীক্ষাগুলো আগে শেষ করা। এরপর স্নাতক প্রথম বর্ষ ভর্তি আটকে থাকা পরীক্ষার দিকে এগুতে চায় সরকার। এরপর কলেজ ও তারপর বিদ্যালয় খুলে দেওয়ার চিন্তা রয়েছে সরকারের।
সম্প্রতি শিক্ষা বিষয়ক সাংবাদিকদের একটি অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, প্রায় ১৭ মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছি আমরা। করোনার এখন যে সংক্রমণ চলছে তা কমে এলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা স্কুলগুলো খুলে দিতে চাই।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের কাছে সবার আগে বাচ্চাদের নিরাপত্তা। তাই সবকিছু বিবেচনা করেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।