শীতের আসার সাথে সাথে সঙ্গে সঙ্গে কদর বেড়ে যায় খেজুর গাছের। গাছ থেকে রস সংগ্রহ, গুড় তৈরি; আর রস ও গুড়ের নানা শীতকালীন পিঠা তৈরির ধুম পরে আবহমান গ্রাম বাংলায়। সারাবছর অবহেলিত খেজুর গাছগুলোকে ঝুড়ে নতুন রূপ দান করেন গাছিরা।
সাতক্ষীরার বিভিন্ন উপজেলার গ্রামে গ্রামে ঘুরে দেখা গেছে, রস সংগ্রহের জন্য খেজুর গাছগুলোকে প্রস্তুত করতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা ।
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের গনপতিপুর গ্রামে সরজিমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাঝবয়সী মোহাম্মদ দফাদার রস সংগ্রহের জন্য গাছ প্রস্তুত করছেন। ব্যস্ততার মধ্যে কিছুক্ষণ কথা হলো তার সাথে।
তিনি বলেন, ‘শীত শুরুর আগেই আমরা নিজের ও বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে খেজুরের গাছ লিজ নিই। এবারও নিয়েছি। রস সংগ্রহের পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে গাছ ঝোড়ার কাজ প্রায়ই শেষ। ইতোমধ্যে গাছ থেকে রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরির কাজও শুরু করেছি। এ বছর শীত একটু দেরিতে পরায় দেরিতেই রস সংগ্রহের কাজ শুরু করতে হয়েছে। আমরা শীত মৌসুমে খেজুরের রস থেকে গুড় তৈরি করি। সেই গুড় বাজারে বিক্রির টাকা দিয়ে কোনোমতে সংসার চলে আমাদের ।
স্থানীয়রা জানান, খেজুরের গুড় এই এলাকা ঐতিহ্য। রস থেকে গুড় তৈরি একটি শিল্প। এই শিল্পের সঙ্গে সাতক্ষীরা সদর ও বিভিন্ন উপজেলার কয়েকশ’ পরিবার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত রয়েছে। শীত এলেই সাতক্ষীরায় প্রায় প্রতিটি পরিবারকে খেজুরের রস থেকে গুড় তৈরি করতে দেখতাম । নতুন খেজুরের গুড় আর নতুন ধানের চাল দিয়ে শুরু হতো নবান্ন উৎসব। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা না থাকায় এবং খেজুর গুড়ের নামে ভেজাল গুড় তৈরি হওয়ায় ঐতিহ্যবাহী এই শিল্পটি প্রায় বিলুপ্তর পথে।